গ্রামের অবহেলিত মানুষ বিশেষ করে নারী, শিশু, দরিদ্র বা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর বিচারপ্রাপ্তির অধিকতর সহজ ও প্রসারিত করার লক্ষ্যে গ্রাম আদালত গঠন করা হয়। আসলে সমাজ, পরিবার রাষ্ট্রসহ নানা বিষয়ে নানা সমস্যার সমাধান এবং বিচারের জন্য মানুষ দেশের প্রচলিত বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রেখে আদালতের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন। কেউ কেউ তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলায় জড়িয়ে জায়গা জমি, ভিটে মাটি বিক্রি করে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েন। এসব নানা ধরণের মামলার কারণে নিম্ন আদালত, উচ্চ আদালত (জজকোর্ট, হাইকোর্ট), পারিবারিক আদালত, শ্রম আদালতসহ বিভিন্ন প্রকারের আদালতের নাম আমরা শুনেছি। হালে এসে সর্বসাধারণের মধ্যে গ্রাম আদালত কথাটি বেশ প্রচার হয়েছে। শুধু তাই নয় এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ওপর। গ্রাম আদালতের মাধ্যমে মানুষ শান্তির পথ খুঁজে পাচ্ছেন। আসলে অধিক দরিদ্র, অধিক জনবহুল ১৬ কোটি মানুষের দেশে বিচারপ্রাপ্ত জনগণের সংখ্যা অত্যাধিক। হাজার হাজার মামলার জটে এখন আদালত পাড়ায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজটের মতো অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রামের মানুষ তাই ছোট খাটো বিচারের জন্য আদালতে যেতে খুব বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকেন। আমাদের দেশে গ্রাম আদালত প্রণীত হওয়ার পর কেবলমাত্র ইউনিয়নের এখতিয়ারভুক্ত এলাকায় প্রযোজ্য হবে বলে ঘোষণা করা হয়। এই আইনটি প্রণীত হয়েছিল গ্রামের দরিদ্র এবং অসহায় মানুষের আইনি সাহায্য খুব সহজে প্রাপ্তির জন্য। তারা শহরে নিয়ে মামলা করে, অনেক বেশি ব্যয়ের বোঝা নিয়ে কখনো সুবিচার পাওয়ার মতো অবস্থায় থাকেন না। আইনজীবীসহ কোর্ট কাচারি তারা যেমন চিনতে পারেন না তেমনি বিচার প্রার্থনায় নানা জটিলতা তাদের নিরুৎসাহিত করে থাকে। মামলার ব্যয় নির্বাহ করায় ভয়ে অনেকেই নির্যাতনের শিকার হয়ে বা জবর দখলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বা সংক্ষুব্ধ হয়েও আদালতে যেতে চান না। সবার সহযোগিতায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠী যাতে তাদের সমস্যা সমাধান সহ সুশাসন এবং সুবিচার সহজভাবে পেতে পারেন সে ব্যাপারে গুরুত্বরোপ করা হয়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস